ইরফান
লেখক: শুভঙ্কর ঘোষ রায় চৌধুরী
মূল্য: ১০০
We encourage you to buy books from a local bookstore. If that is not possible, please use the links on the page and support us. Thank you.
“কাশী জায়গাটাই এমন, দুঃখে কাঁদায় না, সুখে হাসায় না।”
ইরফান
কে এই ইরফান?
সে কি এক রক্ত মাংসের ব্যক্তি নাকি এক চিরন্তন অনুভব যে কিনা মনিকর্ণিকার গহ্বরে থাকে — সেই মনিকর্নিকা, যেখানে এই বিশ্বের সৃষ্টি ও ধ্বংস এক হয়ে মিলে গিয়েছে?
আমার কাছে ইরফান এক অনুভব তাকে ব্যক্ত যদি করতেই হয় তবে রুমির লেখা ধার করেই বলি,
“তুমি কি কখনো দেখছ একটা বীজ মাটিতে বপিত হয়েছে, কিন্তু নতুনভাবে জন্মায়নি?
তাহলে তুমি কেন সন্দেহ করো- মানুষ নামের একটা বীজ জাগবে না?”
ইরফান একজন লাখনৌ থেকে আসা একজন তরুণ কবি যে কিনা আজও ভালোবাসতে চায়
যে কিনা লিপিবদ্ধ করতে চায় কালো এক আবেগ-কুসুম, সে এমনভাবেই চেয়ে থাকতে চায় জীবনের দিকে যেন কেউ কখনো তাকায়নি এমন কুঁড়ির অলক্ষ্যে বেরোনো ফুলের দিকে ; ওস্তাদ বিসমিল্লা খাঁ সাবের তারূণ্য বয়ে আসা পিলু রাগ’এ প্রদোষের আলো থেকে সন্ধ্যার আলোর রেশ মিলিয়ে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত যেমন মনিকর্নিকায় মানুষ এক বিস্ময়ের দিকে চেয়ে থেকেছে জীবনভর।
সূর্যাস্তে সূচিত হয় তিন বন্ধুর মাঝে অমলিন আড্ডা
মহীন, শাম ও ইরফান যেন এক শিশিরবিন্দুর মতোন।
তাদের মাঝে দেখা হলে হয় ব্যাপ্ত জীবনের কথা, আবিল জীবনের কথা সহজ করে বলতে পারা এক সাধনা। সহজের সাধনা। প্রতিকূলতার ভিড়ে সহজ ভাবে বাঁচতে পারা এখন একটা ইউটোপিয়া হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ইরফান সেখানে বিশ্বাস করে যে এই সাধনায় ঋষি ও কবি এক হয়ে যান।
অসূর্যম্পশ্যা অন্তঃপুরবাসিনীর কাছে মনিকর্নিকা এক বাইরের দূত। সমস্ত গোপন কানাকানির একমাত্র খোলা পথ।।
সুদর্শনার প্রতি এক বিন্দু অক্ষর ঢালতে গিয়েও হয়তো অগোচরে ভেসে আসে শামের এসরাজ আর মহীনের মানুষের খবর খোঁজা।
তাদের মাঝে স্পর্শের অলক্ষ্যে খেলা করে যায় শত সহস্র নীরবতা যা একবিংশ শতাব্দীতেও এক কবি সামনে শোনাতেই পছন্দ করে নাহলে যে অন্তনীড়ে কোমল গান্ধার বাজবে কেমন করে?
তাদের মাঝের ব্যবধান কি খুচরো আফসানার সমতুল্যে নাকি এক মহাসিন্ধুর মতোন।
নামহীন গলি দিয়েও ইরফান ও সুদর্শনা হেঁটে যেতে যেতে অন্দরে শত সহস্র মিছিল পেরোতে হয়।
হয়তো বলে ওঠে ইরফান তার ধুলউড়ানিয়া মনকে
চেনো আমায় কি তুমি?
বাতি জ্বেলে দেখে কি তার মন যে
পথের বাঁক গেল কোন দিকে?
শুভঙ্কর ঘোষের লেখা পড়তে পড়তে মনে এসে যায় তরুণ কবিকে লেখা রিলকের চিঠি
“যদি প্রতিদিনের জীবন খুব সাধারণ, ক্ষুদ্র, তুচ্ছ মনে হয়, এজন্য জীবনকে দোষারোপ করো না….কারাগারেও থাকো তুমি, যেখানে চার দেয়ালের ভেতরে পৃথিবীর সব কোলাহল, শব্দ নির্বাক হয়ে থাকে, সেখানেও তুমি নিঃসঙ্গ নও। তোমার সঙ্গে আছে ফেলে আসা শৈশব; অমূল্য স্মৃতির সমৃদ্ধ ভা-ার। এসবের প্রতি দৃষ্টি ফেরাও। নিমগ্ন হয়ে ডুব দাও সোনালি অতীতে। দেখো, তোমার ব্যক্তিত্ব আরো বিকশিত হবে, তোমার একাকিত্ব প্রসারিত হওয়ার জায়গা পাবে। নিজের ভেতর খুঁজে পাবে এক আশ্চর্য গোধূলি, জাগতিক কোলাহল যেখানে অনেক দূরের বিষয়।”
ইরফানরা হারিয়ে গেলেও আঁধারকাব্যে বাতি জ্বেলে ওঠে অচিরেই,
মননে অম্রিতাক্ষর ছন্দে বয়ে আসে বিথোভেনের মুনলাইট সোনাটা আবার কখনও ক্ষতের স্বরলিপিতে ছেয়ে থাকা jazz।।
“তুই প্রেমে, অথচ তুই বিরহে!”
Favourite Quote:
“জীবন আর মৃত্যুর এই প্রেম, জল আর আগুনের এই মধুর সাংসারিক আপস, সব মিশে যায় বারাণসীতে।”
loosely translated to English as:
Love pertaining to life and death, the worldly compromises flaring out of fire and water — everything blends and finds it’s shape in Varanasi.